নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মালিবাগের বাসিন্দা নাহিদ হাসান। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহক তিনি। নিয়মিত বিল পরিশোধ করে আসছেন। মঙ্গলবার (২৪ মে) হঠাৎ তার মোবাইলে তিতাস গ্যাস থেকে এসএমএস আসে। সেখানে এক লাখ টাকার গ্যাস বিল বকেয়া জানিয়ে দ্রুত তা পরিশোধের তাগিদ দেওয়া হয়। মেসেজ দেখে নাহিদের চোখ ছানাবড়া। দ্রুত ছুটে যান তিতাস গ্যাসের মতিঝিল আঞ্চলিক কার্যালয়ে।
তবে তিতাসের কার্যালয়ে এসে জানতে পারেন, তার কোনো বকেয়া নেই। তিতাস গ্যাসের নতুন সফটওয়্যার ট্রায়াল দিতে গ্রাহকদের এমন এসএমএস পাঠানো হচ্ছে। বিল বকেয়া নেই জেনে স্বস্তি মিললেও হয়রানির শিকার হওয়ায় ক্ষোভ জানান নাহিদ।
শুধু নাহিদ নন, তিতাস গ্যাসের মতিঝিল আঞ্চলিক কার্যালয়ের অন্তত ৫০ হাজার গ্রাহকের কাছে এমন ‘ভুয়া’ এসএমএস পাঠানো হয়েছে। বকেয়ার অঙ্কও মনগড়া, যা দেখে অনেকেই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ছুটে এসেছেন তিতাসের মতিঝিল কার্যালয়ে।
তবে তিতাসের কর্মকর্তারা বলছেন, ইচ্ছে করেই এমন এসএমএস দেওয়া হয়েছে। নতুন সফটওয়্যার ট্রায়ালের সময় সবার কাছে এমন এসএমএস চলে গেছে। এ সফটওয়্যারে আপডেট তথ্য নেই সেজন্য এটা কোনো সমস্যা নয়।
তিতাস সূত্রে জানা গেছে, মতিঝিল আঞ্চলিক কার্যালয়ের আওতায় তিতাসের গ্রাহক ৭২ হাজার। তাদের মধ্যে যাদের মোবাইল নম্বরসহ তথ্য সফটওয়্যারে সেভ করা আছে, তাদের কাছে এ ধরনের এসএমএস গেছে। সফটওয়্যারে অন্তত ৫০ হাজার গ্রাহকের নম্বর সেভ। অর্থাৎ এ ৫০ হাজার গ্রাহকের মোবাইলে বকেয়ার এসএমএস গেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের ৫ মাসে ১২টি কার্গো এলএনজি আমদানি করতে হয়েছে। এবার ১৩তম কার্গো আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। এক কার্গোতে ৩,২০০,০০০ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করা হবে বলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। আর এ জন্য ব্যয় হবে ৮৮৬ কোটি ৭৬ লাখ ৭ হাজার ৮৪০ টাকা।
সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০ (সর্বশেষ ২০২১ সালের সংশোধনীয়সহ)’-এর আওতায় মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে কোটেশন সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে ২০২২ সালের জন্য ১৩তম কার্গো এলএনজি আমদানি হচ্ছে। এরআগে গত সপ্তাহে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ১২তম কার্গো আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতিমাসে গড়ে ২টি করে কার্গো এলএনজি আমদানি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে স্পট মার্কেট থেকে কার্গো গ্রহণের জন্য ওই সফটওয়্যার-এর মাধ্যমে ৩৫টি দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হয়। এরমধ্যে ২৭টি কার্গো এলএনজি গ্রহণের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক: অনুদান ও উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার নামে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করেছে কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র। শিক্ষাবোর্ডের নামে ভুয়া নাম্বার ব্যবহারে অভিভাবকদের ফোনে কল করে কৌশলে নেওয়া হয় পিন কোড। উপবৃত্তির টাকার সঙ্গে পিন কোড, কখনো পাসওয়ার্ড যোগ-বিয়োগে কৌশলে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপসের গোপনীয়তা জেনে হাতিয়ে নেওয়া হয় টাকা। যা দ্রুত বিভিন্ন নাম্বারে অল্প অল্প করে ট্রানজেকশনে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি বলছে, উপবৃত্তি দেওয়ার নামে কয়েকটি প্রতারক চক্রের অভিনব প্রতারণায় উৎকণ্ঠায় রয়েছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা। গত ৩/৪ বছর ধরে সক্রিয় একটি প্রতারক চক্রের ১২ সদস্যকে শনাক্ত করেছেন। এরমধ্যে চক্রের প্রধান আশিকুর রহমানসহ (২৫) তিনকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয়েছেন তারা।
বুধবার রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
প্রতারক চক্রের সদস্যরা গণহারে বিভিন্ন নাম্বারে মেসেজ পাঠায়। শিক্ষাবোর্ডের নামে ভুয়া নাম্বার দিয়ে যোগাযোগ করতে বলে। কোনো সরলমনা শিক্ষার্থী বা অভিভাবক যদি ফাঁদে পা দেন, তাকে মোটা অংকের টাকা পাঠিয়ে প্রতারিত হতে হচ্ছে। এধরনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন থানায় প্রতারণা আইনে মামলাও হয়েছে।
বিষয়টি নজরে আসার পর সিআইডি’র এলআইসি’র একটি দল চক্রটিকে শনাক্ত ও তাদের কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধান শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় একাধিক প্রতারণার চক্র শনাক্ত করা হয়।
প্রতারিত ব্যক্তি ও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও সরেজমিন পাওয়া তথ্য সংগ্রহ বিশ্লেষণসহ ঘটনায় ১২ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এরমধ্যে আশিকুর রহমান হচ্ছেন চক্রের প্রধান। তিনি ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার কাউলিবেড়ার মটরা আবু কলাম মোল্লার ছেলে।
এলআইসি’র একটি দল অভিযান চালিয়ে গত মঙ্গলবার (২৪ মে) দিবাগত রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইল এলাকা থেকে আশিকুরকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের সাইফুল ইসলাম (৩০) ও মোক্তার হোসেন (৩৪) নামে একই এলাকার আরও দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তাররা প্রায় ৩/৪ বছর ধরে উপবৃত্তির বিভিন্ন শিক্ষার্থীর মোবাইল নাম্বারে মেসেজ দিয়ে প্রতারণা করে আসছিল। উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার নামে প্রতারণা সম্পর্কে মুক্তা ধর বলেন, প্রথমে শিক্ষাবোর্ডের নামে টার্গেট করা মোবাইল নাম্বারে মেসেজ দিয়ে যোগাযোগের নাম্বার হিসেবে চক্রের সদস্যের নাম্বার দেওয়া হয়। করোনার আগে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তির টাকা দেওয়া হলেও করোনার সময় সেটি বন্ধ থাকায় সে সুযোগ নেয় প্রতারক চক্র। চক্রের সদস্যরা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের উপবৃত্তির টাকা দেওয়া হচ্ছে বলে প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন অংকের টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়।
দিনাজপুর সংবাদদাতা: দিনাজপুরে ‘ঘুষের’ ৮০ হাজার টাকাসহ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করেছে দুদক। বুধবার বিকেলে তাকে আটক করা হয়েছে।
দুদকের দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আহসানুল কবীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, চিরিরবন্দর উপজেলার আম্বারি এলাকার অটো রাইস মিল ঈষাণ অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফুড লিমিটেডের লাইসেন্স নবায়নের জন্য ৮০ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছিলো মোস্তাফিজুর রহমান। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা রাশেদুজ্জামান ওই টাকা নিয়ে মোস্তাফিজুর রহমানের কার্যালয়ে এসেছিলো।
ওই ঘুষের টাকাসহ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করা হয়েছে।
রংপুর সংবাদদাতা: সাড়ে চার বছর পর রংপুরে শুরু হচ্ছে হাইটেক পার্কের নির্মাণকাজ। আজ বৃহস্পতিবার এ পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) বিকর্ণ কুমার ঘোষ স্বাক্ষরিত একটি আমন্ত্রণপত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
ভারতীয় অর্থায়নে রংপুরসহ বাংলাদেশের ১২টি জেলায় আইটি/হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে এবার রংপুরে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হতে যাচ্ছে। কথা ছিল ২০১৮ সালে রংপুরে হাইটেক পার্ক নির্মাণ শুরু হবে। কিন্তু নির্মাণকাজ শুরুর আগেই ২০২০ সালের জুনে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। এ নিয়ে হতাশ ছিল রংপুরবাসী। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে রংপুর সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খলিশকুড়ি এলাকায় বহুল প্রতীক্ষিত হাইটেক পার্কের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান এবং তথ্যপদ্ধতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উমর ফারুক বলেন, প্রতিবছর লাখ লাখ তরুণ-তরুণী পড়ালেখা শেষ করছে। তাদের বেশির ভাগই শিক্ষিত বেকার হয়ে থাকছে। যেহেতু রংপুরে ভারী শিল্প-কলকারখানা নেই, সে ক্ষেত্রে আইটিনির্ভর হাইটেক পার্কটি গড়ে তোলা জরুরি। এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আত্মনির্ভর হতে চাওয়া তরুণ-তরুণীরা বেশি উপকৃত হবে।
এই হাইটেক পার্ক প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্পায়ন, তরুণদের কর্মসংস্থান এবং হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার শিল্পের উত্তরণ ও বিকাশে সুযোগের দুয়ার খুলে দেবে বলে জানান বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ড. আবু কালাম ফরিদ উল ইসলাম।
তিনি বলেন, হাইটেক পার্ক বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলের যুবকরা কাজের সুযোগ পাবে। তারা মেধা দিয়ে এ কাজ করবে। তথ্যের প্রসার ও আইটি বিভাগ আরও প্রসারিত ও জনবান্ধব হবে। ফলে বাংলাদেশে সফটওয়্যার শিল্পের আরও বিকাশ ঘটবে। জাতীয় রাজস্ব আয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে এ পার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জানা যায়, দেড় শ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে রংপুরে হাইটেক পার্ক স্থাপনের পরিকল্পনা হিসেবে নগরীর খলিশাকুড়িতে প্রায় ৯ একর খাসজমি বন্দোবস্ত করে দেয় রংপুর জেলা প্রশাসন। বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার নামে এ পার্কের নামকরণের প্রস্তুাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল সারা দেশের জেলা পর্যায়ে ১২টি হাইটেক পার্ক প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর মধ্যে রংপুর হাইটেক পার্কের জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ১৫৪.৫৪ কোটি টাকা ধরা হয়। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
নওগাঁ সংবাদদাতা: নওগাঁয় এবার তিন লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৫ টন আম উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আমের ব্যাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত নওগাঁর বাজারে স্থানীয় গুটি জাতের আম আসতে শুরু করেছে। বুধবার জেলার ১১টি উপজেলায় গুটি বা স্থানীয় জাতের আমপাড়া ও বিক্রয়ের মধ্যদিয়ে এ বছরের আম সংরক্ষণ ও বিপণন কার্যক্রম শুরু করেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
এ বছর জেলায় ২৯ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ফলন ধরা হয়েছে ১২.৫০ টন। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা তিন লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৫ টন। এই পরিমাণ আম বিক্রয় থেকে দুই হাজার কোটি টাকা আয় হবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ছাড়া গত বারের চেয়ে জেলায় এবার তিন হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে আমচাষ বেশি হওয়ায় উৎপাদন অন্য যেকোনও সময়ের রেকর্ড ভাঙবে বলে মনে করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামছুল ওয়াদুদ বলেন, নওগাঁয় আম চাষ দিন দিন লাভজনক হয়ে উঠছে। তাই নওগাঁর চাষিরা ধানের পাশাপাশি আম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বুধবার থেকে গুটি আম বা স্থানীয় জাতের আম পাড়ার মধ্য দিয়ে শুরু হলো এ বছরের আম সংরক্ষণ ও বিপণনের তাজ। ১০-১৫ দিন পর পর বিভিন্ন জাতের আম বাজারে আসবে বলে তিনি জানান।
নিজস্ব প্রতিবেদক: খুলনা বিভাগসহ দেশের আটটি জেলার উপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহ কিছু কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে। একইসঙ্গে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
বুধবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফরুক স্বাক্ষরিত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
পূর্বাভাসে বলা হয়, গোপালগঞ্জ, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, পাবনা, রাজশাহী, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলাসহ খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বয়ে যাওয়া এই তাপপ্রবাহ কিছু কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে। একইসঙ্গে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
তিনি বলেন, আগামী তিন দিনে দেশের আবহাওয়ায় সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। গতকাল সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৭৫ শতাংশ এবং বাতাসের গতি ও দিক দক্ষিণ/দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার, যা অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ায় ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সর্বশেষ রেকর্ড অনুযায়ী দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোর জেলায় ৩৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রাম ও কুতুবদিয়ায় ২৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে মাইজদী কোর্টে।
পটুয়াখালী সংবাদদাতা: সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা বা আইপিএম পদ্ধতি ব্যবহারে পটুয়াখালীতে চিনা বাদাম চাষ করে এবার ব্যাপক ফলন পাওয়া গেছে। এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে কীটনাশক ব্যবহার না করে পোকামাকড়ের আক্রমণ ছাড়াই ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হচ্ছে।
ফলে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন এবং কম ব্যয়ে অধিক ফসল ফলানো সম্ভব হয়েছে। আগামীতে এই প্রযুক্তি কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে কৃষি বিভাগসহ বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা।
পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলের বেলে মাটিতে বাদামের ভালো ফলন হচ্ছে। তবে বাদাম চাষে পোকামাকড়ের আক্রমণ হওয়ায় কৃষক বিভিন্ন সময় ক্ষতির মুখে পড়ছেন। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের চাষাবাদে আধুনিক পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দিতে পটুয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় চিনা বাদামের প্রদর্শনী প্লট স্থাপন করা হয়েছে।
ইউএসআইডি মিশনের অর্থায়নে ফিট দ্যা ফিউচার বাংলাদেশ ইন্ট্রিগেডেট পেস্ট ম্যানেজমেন্ট একটিভিটি নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষককের বাদাম ক্ষেতে আঠাঁলো ফাঁদ, ফেরোমন ফাঁদ, পাচিং এসওপি এবং বায়োপেস্টিসাইড ব্যবহার করা হচ্ছে।
ফিট দ্যা ফিউচার বাংলাদেশ ইন্ট্রিগেডেট পেস্ট ম্যানেজমেন্ট একটিভিটি’র ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমরা এই প্রকল্পের প্রকল্পের মাধ্যমে পটুয়াখালী জেলায় পাঁচটি প্রদর্শনী দিয়েছি। এ থেকে আমরা কৃষকদের দেখানোর চেষ্টা করেছি চিনা বাদামে যে প্রধান প্রধান পোকামাকড় আক্রমণ করে তা প্রতিরোধে কোনো কেমিকেল পেস্টিসাইড ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।
এরই মধ্যে তাদের ফলনের পার্থক্যও দেখানো হয়েছে। যেহেতু পটুয়াখালীতে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে চিনা বাদাম চাষ হয় সেক্ষেত্রে সকল কৃষকরা যাতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন সে বিষয়ে তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।’
আধুনিক এবং নিরাপদ এসব প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে বিগত সময়ের চেয়ে কিংবা যেসব জমিতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়নি সেসব জমির চেয়েও এবার ভালো ফলন পাওয়া গেছে। পাশপাশি ভালো দাম পাওয়ায় খুশি স্থানীয় কৃষকরা।
পটুয়াখালী সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া এলাকার কৃষক সোবাহান গাজী জানান, বিগত বছরের চেয়ে এবার ফলন অনেক বেশি ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে তারা বাদাম তোলা শুরু করেছেন। এবার বাদামের দামও ভালো। কাঁচা অবস্থায় ২৪০০ টাকা মণ এবং শুকনো অবস্থায় ৪ হাজার টাকা মণ হিসেবে বিক্রি করতে পারছেন।
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ কে এম মহিউদ্দিন বলেন, ‘অনুকূল আবহাওয়া এবং ভালো ফলন পাওয়ায় বিগত বছরের চেয়ে এবার পটুয়াখালী জেলায় বেশি পরিমাণ জমিতে চিনা বাদামের চাষ হয়েছে।
গত বছর ৪৪০০ হেক্টর জমিতে চিনা বাদাম চাষ হলেও এবার হয়েছে ৫৭৮৩ হেক্টর জমিতে। তবে আইপিএম পদ্ধতির এই চাষাবাদ কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষকরা যেমন অধিক ফসল ঘরে তুলতে পারবেন তেমনি বাদাম চাষে তাদের অগ্রহ বাড়বে। এতে করে বাদাম থেকে তেল উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা তা অর্জন করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পটুয়াখালী সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চিনা বাদাম দক্ষিণ অঞ্চলের অন্যতম একটি তেল জাতীয় ফসল।
তবে এই অঞ্চলে এখন স্থানীয় জাতের চিনা বাদাম চাষ হয়। এ ক্ষেত্রে কৃষকরা যদি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বারি চিনা বাদাম-৮ এবং বারি চিনা বাদাম-৯ চাষাবাদ করেন তবে কৃষক অনেক বেশি ফলন পাবেন।’
চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: আসন্ন পবিত্র কুরবানী সামনে রেখে দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে বেড়েছে মসলা জাতীয় পণ্যের দাম। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে শুকনা মরিচ, জিরা, দারুচিনি, ধনিয়া, হলুদ, বাদাম, লবঙ্গ। বেড়েছে মসুরের ডালের দামও।
ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া, আন্তর্জাতিক বাজারে মসলার মূল্যবৃদ্ধি, কনটেইনার ভাড়া বৃদ্ধিকে দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ডলার স্থিতিশীল না হলে কুরবানীর ঈদ সামনে রেখে দাম আরেক দফা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। আর বাজার তদারকি না থাকার কারণেই পণ্যের দাম ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো বাড়াচ্ছেন বলে মনে করছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাবের) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন।
খাতুনগঞ্জের আড়তদার এবং ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ জায়েদী বলেন, ডলারের দাম বাড়ার কারণে আমদানি নির্ভর মসলাগুলোর দাম বেড়েছে। রমাদ্বান শরীফের পর থেকে মসলা জাতীয় পণ্যে কেজিপ্রতি ৫ থেকে ৫০ টাকারও বেশি বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়লেই দেশের বাজারে দাম বাড়ে। ডলারের দাম বৃদ্ধি ও চাহিদা বেশি যোগান কম থাকার কারণেও দাম বাড়ে। এছাড়া কনটেইনার ভাড়া বৃদ্ধিও মাসলার দাম বাড়ার কারণ।
তিনি বলেন, ডলার স্থিতিশীল না হলে ঈদ সামনে রেখে মসলার দাম আরেক দফা বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে আমদানি পণ্য দেশে আনতে খরচ বেশি পড়ছে। কনটেইনার ভাড়া বেশি দিতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে মসলা জাতীয় পণ্যের দাম বাড়ছে।
বাজারের সার্বিক বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাবের) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, বাজার তদারকি না থাকার কারণেই ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো মুনাফা করছেন। যে যেভাবে পারছেন দাম বাড়াচ্ছেন। মসলার বেশ কিছু আইটেমের দাম কোনো কারণ ছাড়াই বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মূলত অতিরিক্ত মুনাফা করতেই দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে কে কীভাবে মানুষের পকেট কাটতে পারে তা নিয়ে। শুকনা মরিচ তো দেশি পণ্য। এটা তো আমদানি করতে হয় না। অথচ এটারও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে জেলা প্রশাসন চুপ হয়ে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকার মাঠে ছিল, মিসগাইড করে তাদের কার্যক্রমকেও দমিয়ে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। তাদেরকে বিভিন্নভাবে চাপে রাখছেন ব্যবসায়ীরা। কেউ যদি বাজার মনিটরিংয়ে না থাকে তাহলে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো মুনাফা করবে। সবমিলিয়ে ভুক্তভোগী হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
নওগাঁ সংবাদদাতা: গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নওগাঁর খামারি ও কৃষকরা। ফলে জেলার হাজার হাজার খামারি তাদের গবাদিপশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। পর্যাপ্ত খাবারের যোগান দিতে না পেরে কেউ কেউ আবার গবাদিপশুই বিক্রি করে ফেলছেন।
খামারিরা বলছেন- পশুখাদ্যের দাম বাড়লেও বাড়ছে না দুধের দাম। খাবারের সঙ্গে দুধের দামের সামঞ্জস্য না থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। পশুদের পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গো-খাদ্যের দাম বেড়ে গেলেও সরকার কমানোর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা।
খামারি ও কৃষকরা বলছেন, সংসারে সচ্ছলতা আনতে ও পরিবারের দুধের চাহিদা মেটাতে গবাদিপশু লালনপালন করেন তারা। খড় ও ঘাসের পাশাপাশি দানাদার খাবার হিসেবে ভুসি, খৈল, আটা ও ফিড দেওয়া হয়। গত ২০ দিনের ব্যবধানে প্রকারভেদে গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০-২০ টাকা। দফায় দফায় দাম বেড়েই চলেছে। খাবার জোগান দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। খাবারের দাম বাড়ায় দুধ উৎপাদন ও গরু মোটাতাজাকরণ ব্যাহত হচ্ছে। এভাবে পশুখাদ্যের দাম বাড়তে থাকলে খামার বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া তাদের কোনো উপায় থাকবে না।
বদলগাছী উপজেলার চাকরাইল গ্রামের দুগ্ধ খামারি রুস্তম আলী। তিনি বলেন, আমার খামার থেকে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ২৫ লিটার দুধ পাওয়া যায়। এ পরিমাণ দুধের দাম পাওয়া যায় ১ হাজার ২০০ টাকা। বাড়ির খড় ও ঘাস ছাড়াও এতগুলো গরুর পেছনে দানাদার খাবারের খরচ পড়ে প্রায় ১ হাজার ৮০০ টাকার মতো। গত একমাস থেকে দানাদার খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের মতো খামারিদের জন্য পশুপালন কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, গো-খাদ্যের দাম বাড়লেও বাড়েনি দুধের দাম। এতে করে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
একই গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন বলেন, আমরা কৃষক মানুষ। সংসারের উন্নয়নে গরু-ছাগল পালন করে থাকি। বাড়িতে পাঁচটি গরু আছে। বাড়ির খড় খাওয়ানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্যবান রাখতে দানাদার কিছু খাবার দিয়ে থাকি। যেভাবে খাবারের দাম বাড়ছে এতে করে কেনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই যে পরিমাণ দানাদার খাবার দেওয়া দরকার তুলনামূলক কম করে দেওয়া হচ্ছে। সরকারের উচিত খামারি ও কৃষকদের বাঁচাতে পশুখাদ্যের দাম কমানো হোক।