নিউজ ডেস্ক: সাধারণত আমরা লবণকে রান্নার উপকরণ হিসেবেই ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আপনি কি জানেন, লবণ শুধু খাবার বা রান্নার ক্ষেত্রেই নয়, অন্য অনেক কাজে ব্যবহৃত হয়। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক, রান্না ছাড়াও আর কোন কোন কাজে লবণ ব্যবহার করা যায়।
কফির মগ পরিষ্কার করতে লবণ ব্যবহার করা যায়। এক্ষেত্রে সেই মগে লবণপানি ঢেলে কিছুক্ষণ রেখে তারপর ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন দাগ অনেকটাই কমে এসেছে। দীর্ঘসময় ধরে ফল তাজা রাখতেও লবণ ব্যবহার করা যায়। লবণ ফল পচে যাওয়া আটকায়। ফলের খোসা ছাড়িয়ে রাখলে তা কালো হতে শুরু করে, তাই ফলের উপর যদি কিছুটা লবণ ছড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে ফলগুলো দ্রুত নষ্ট হবে না এবং কালোও হবে না। কাপড় থেকে দাগ দূর করতেও লবণ ব্যবহার করা যায়। এর জন্য আপনার পোশাকটি লবণ পানিতে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর কেচে নিন। এছাড়া দাঁত পরিষ্কার রাখতে লবণের ব্যবহার বহুকাল থেকেই হয়ে আসছে। লবণ দাঁতের পুষ্টির ঘাটতি দূর করে এবং দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
বিশেষজ্ঞরাও দাঁতের হলদেটে ভাব কাটানোর জন্য সাধারণত লবণ ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ঘরের সিঙ্ক পরিষ্কার করতেও লবণ ব্যবহার করা যায়। যদি শত চেষ্টার পরেও সিঙ্ক থেকে দাগ না উঠতে চায়, তাহলে এটি পরিষ্কার করার জন্য গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে তা সিঙ্কে ঢালুন। এতে করে সিঙ্কের সব দাগ পরিষ্কার হবে। যেকোনো ব্যাগ থেকে গন্ধ দূর করতে লবণ ব্যবহার করতে পারেন। ব্যাগের ভেতর থেকে সব বের করে নিয়ে ব্যাগে লবণ ছড়িয়ে চেন আটকে সারা রাত রেখে দিন। সকালে লবণ ঝেড়ে ফেলুন। দেখবেন গন্ধ চলে গেছে। এছাড়া রান্না করার পর হাত থেকে যদি পেঁয়াজ এবং রসুনের গন্ধ না যায় তবে আপনি লবণ ব্যবহার করতে পারেন। এ জন্য, ভিনেগার এবং লবণ মিশ্রিত করে তা আপনার হাতে ঘষুন। এতে হাতের গন্ধ দূর হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন ইস্যুতে যখনই ভারত সরকারের সমালোচনার চেষ্টা হয়েছে, তখনই প্রতিবাদকারীরা ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সমর্থকদের প্রতিবন্ধকতা কিংবা হামলার মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ভারত সরকারের যে কোন পদক্ষেপের বিরোধিতা করা বাংলাদেশে বেশ ‘স্পর্শকাতর’ বিষয় হয়ে উঠেছে বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করেন।
ডাকসুর ভাইস-প্রেসিডেন্ট বা ভিপি নুরুল হক নূরের ওপর সর্বশেষ হামলার ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে বেশী আলোচনা হচ্ছে।
ভারত বিরোধিতার জন্যই হামলা?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নুরুল হক নূরের ওপর এ নিয়ে নয়বার হামলা হলো। ভিপি নূর এবং তার সহযোগীদের ওপর একটি হামলার ঘটনাটি ঘটে ১৭ই ডিসেম্বর।
ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবেশ করার সময় তাদের ওপর হামলা হয় এবং অভিযোগের আঙ্গুল ওঠে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের নেতা-কর্মীদের দিকে।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বিরোধী বিক্ষোভ:
সুন্দরবনের কাছে রামপালে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশে আপত্তি উঠেছিল। আর যে বিদ্যুৎকেন্দ্র বিরোধী যে আন্দোলন গড়ে ওঠে, তার সামনের কাতারে ছিল বিভিন্ন সংগঠন।
এ আন্দোলন করার সময় কয়েক দফায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় সরকারপন্থী সংগঠনের হামলার শিকার হয়েছিল আন্দোলনকারীরা।
রামপালে প্রকল্প বিরোধী আন্দোলনের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা তখন বারবার বলেছেন যে ওই আন্দোলনের সাথে ভারত বিরোধিতার কোন সম্পর্ক নেই বরং বিষয়টি পুরোপুরি পরিবেশগত।
কিন্তু বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন যে ওই আন্দোলনের সাথে ভারত বিরোধিতার একটি সম্পর্ক আছে এমন ধারণা সরকারপন্থী সংগঠনগুলোর কারো কারো মধ্যে রয়েছে।
রামপাল বিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে ছিল, তখন জ্বালানী এবং বিদ্যুৎ খাতের ম্যাগাজিন ‘এনার্জি ও পাওয়ার’-এর সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন বলেছিলেন, রামপাল প্রকল্পের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই একটি প্রচারণা আছে যে ভারতীয় অংশে সুন্দরবনের কাছে প্রকল্পটি করতে না পেরে তা বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
আমজাদ হোসেন বলেন, অনেকে মনে করছেন ইন্ডিয়ান গর্ভমেন্ট চাইলেই এটি বন্ধ হয়ে যাবে। যেহেতু বাংলাদেশের সরকারের কাছ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না, সেজন্য প্রকল্পের বিরোধিতাকারীরা এটাকে অ্যান্টি-ইন্ডিয়ান সেন্টিমেন্ট হিসেবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে।”
ভারত বিরোধিতা নিয়ে সমস্যা কোথায়?
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতেও বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিকদের অনেকেই অস্বস্তি বোধ করেন। অনেকেই নাম প্রকাশ করে মন্তব্য করতে চাননি। বক্তব্যে ভারত বিরোধিতা প্রকাশ পেলে কোন ধরণের ঝামেলায় জড়ানোর আশংকা রয়েছে কারো কারো মনে।
এদের কেউ কেউ মনে করছেন, বিষয়টির একটি রাজনৈতিক মাত্রা আছে।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে গত প্রায় এগারো বছর যাবত ভারতের বেশ ভালো সম্পর্ক বজায় রয়েছে। এমনকি বাংলাদেশে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের বিতর্কিত সাধারণ নির্বাচনে ভারত অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছে। ফলে ভারতের উপর বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের এক ধরণের রাজনৈতিক নির্ভরতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।
লাইফস্টাইল ডেস্ক :
বাজারে পাওয়া যাচ্ছে তরমুজ। ইফতারে তরমুজের ঠাণ্ডা এক গ্লাস স্মুদি পরিবেশন করতে পারেন। খুব সহজেই বানানো যায় এই স্মুদি।
উপকরণ
দেড় কাপ তরমুজ (বিচি ছাড়া)
১টি কলা (ছোট টুকরা)
দই- ৩/৪ কাপ
এক মুঠো পুদিনা পাতা
প্রস্তুত প্রণালি
তরমুজের টুকরা ও কলা ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। দই ও পুদিনা পাতা দিয়ে আবার ব্লেন্ড করুন। স্বাদ অনুযায়ী চিনি দিতে পারেন। আবার কম মিষ্টি খেলে চিনি না দিলেও চলবে। বরফ দিয়ে ঠাণ্ডা স্মুদি পরিবেশন করুন ইফতারে।
বিশেষ সংবাদদাতা : সেই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। দেশের সিংহভাগ আয় এ কৃষি কাজের মাধ্যমেই উঠে আসে। সেই হিসেবে কৃষকদের এই দেশে সবচেয়ে বেশি মূল্যায়ন করার কথা ছিল। কিন্তু তার পরিবর্তে কৃষকদের বরাবরই অবহেলার শিকার হতে হয়।
শুধুমাত্র সরকারের সঠিক তত্ত্বাবধানের অভাবে যখন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপাদনের পর ফসলের ন্যায্য মূল্য না মেলে, তখন কৃষকদের বেঁচে থাকাটাই কষ্টকর হয়ে যায়। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, মাসের পর মাস খেটে তারা মানুষের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করে। কিন্তু বিনিময়ে নিজেদের খাবার টাও মেলে না!
এ বছরেও ধানের প্রচুর ফলন হয়েছে। দেশের সকল মাঠ জুড়ে শুধু ধান আর ধান। ধানের গন্ধে চারিদিক ভরে গেছে। অধিক ফলনের এই খুশি প্রতিটি কৃষকের ঘরে ঘরে ছড়িয়ে যাওয়ার বদলে তাদের উৎকন্ঠার মধ্যে দিন পার করতে হচ্ছে। কারণ মিলছেনা ন্যায্য দাম।
একমণ ধানের দাম মাত্র ৫০০-৫৫০ টাকা। এত অল্প দাম হওয়ায় তারা আজ শুধুই হায় হায় করছে। অথচ এই চালের দামও বাজারে আকাশ ছোঁয়া। তারপরও বিভিন্ন সিন্ডিকেটের কারণে চাষীদের জীবন মানের কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। অথচ সরকারের একটু সদিচ্ছাই পারে তাদের এ করুন অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে।
চাষীরা সারা বছর কষ্ট করে যদি দু বেলা দু মুঠো খেতেই না পারে তাহলে তাদের জীবন চলবে কিভাবে? ফসল ফলানোর পরে যদি লাভের বদলে উল্টো ক্ষতির মুখে পরে তাহলে কিসের আশায় তারা ফসল ফলাবে। এমনিতেও লোকসানের কারণে অনেক কৃষক এ পেশা থেকে সরে এসেছে।
এদিকে পাল্লা দিয়ে কমছে কৃষি জমির পরিমাণ। এ রকম চলতে থাকলে এক সময় আর এ কৃষকদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। এমনিতেও দেশের বাইরে থেকে প্রচুর পরিমাণ কৃষি পণ্য আমদানি করতে হয়। এর পরিমাণও দিনদিন বেড়েই চলছে। অন্য দেশ থেকে যদি অধিক দামে পণ্য কিনতে পারি, তবে সেই একই পণ্যের দামের অভাবে আমার দেশের কৃষক কেনো না খেয়ে থাকবে? কৃষকদেরকে জিম্মি করে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী রাতারাতি অঢেল টাকার মালিক হয়েছে এরকম নজির অসংখ্য। কিন্তু কৃষকদের নিয়ে ভাবার লোকের বড়ই অভাব। পত্রিকার পাতা খুললে যখন দেখি অভাবের তাড়নায় এই কৃষকেরা আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নেন, তখন বিবেকের দংশনে অস্থির হয়ে যাই।
অথচ এ কৃষকের হাতেই নাকি সোনা ফলে। কাজেই সরকারের প্রতি অনুরোধ কৃষদের বাঁচতে দিন। সঠিক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে কৃষকদের ঘামের যথাযথ মূল্যের ব্যবস্থা করুন। কৃষক বাঁচলেই দেশ বাঁচবে। দেশের কৃষকরা আজ কাঁদছে। তাদের চোখের পানিগুলো মুছে দিন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশি পদার্থবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. আতাউল করিম। তিনি দ্রুতগামী ভাসমান ট্রেন আবিষ্কার করেছেন। ১৯৭৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমালেও আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা করতে প্রায়ই বাংলাদেশে আসেন।
জন্ম ও ছাত্রজীবন: ১৯৫৩ সালের ৪ মে সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় জন্ম ড. আতাউল করিমের। বাবা ছিলেন ডাক্তার। ড. করিমের পূর্বপুরুষরা ভারতের আসাম ও মেঘালয় থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে এসেছিলেন। তার মা এদেশে এসেছিলেন বিয়ের পর। ছেলের গৃহশিক্ষক ছিলেন তিনিই। প্রাথমিক ও মৌলিক শিক্ষার জন্য ড. করিম সাতমা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েন। এক বছর অধ্যয়ন করেন পাথারিয়া ছোটলেখা হাই স্কুলে। এরপর ভর্তি হন ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে, যা তখন ইস্ট পাকিস্তান ক্যাডেট কলেজ নামে পরিচিত ছিল। ১৯৬৯ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় আতাউল করিম ৬৪,৪৩২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে চতুর্থ স্থান অধিকার করেন। ১৯৭২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজ থেকে অংশ নিয়ে ৩৯,৮৬৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম হন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগে। ১৯৭৬ সালে বিএসসি (সম্মান) পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চলে যান। ভর্তি হন সেখানকার আলবামা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে ১৯৭৮ সালে পদার্থবিদ্যায় এবং ১৯৭৯ সালে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮২ সালে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবন: আতাউল করিম ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাস রাজ্যের রাজধানী লিটিল রকের ইউনিভার্সিটি অব আরকানসাসে শিক্ষকতা শুরু করেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যের ওল্ড ডমিনিয়ন ইউনিভার্সিটি (ওডিইউ) ইন নরফোকের গবেষণা বিভাগের ভাইস-প্রেসিডেন্ট। বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে প্রতি বছর যে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে, তার তত্ত্বাবধান করেন তিনি। এখানে যোগদানের আগে তিনি সিটি কলেজ অব নিউ ইয়র্কের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডীনের দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে তিনি নতুন তিনটি বিভাগ বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ও আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সিস্টেম সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। সিটি কলেজ অব নিউ ইয়র্কে যোগদানের আগে ১৯৯৮-২০০০ সাল পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অব টেনেসি’র ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। এরও আগে তিনি (১৯৯০-১৯৯৮) ওহিও রাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ডাইটনের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান এবং ইলেক্ট্রো-অপটিকস বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সাল থেকে ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রাম কমিটি (আইপিসি) অব ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন কম্পিউটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইসিসিআইটি) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৫ সাল থেকে টেকনিক্যাল কমিটি অব ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইলেক্ট্রনিক্স, টেকনোলজি অ্যান্ড অটোমেশনের (আইইটিএ) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিবছর গবেষণা জার্নালে প্রকাশের জন্য লেখা এক ডজনেরও বেশি নিবন্ধ পর্যালোচনা করেন তিনি।
গবেষণা ও লেখালেখি: ড. আতাউল করিমের গবেষণার পরিধি ব্যাপক ও বিশাল। এরমধ্যে রয়েছে- অপটিক্যাল কম্পিউটিং, প্যাটার্ন/টার্গেট রিকগনিশন, নাইট ভিশন, বিভিন্ন প্রকার ডিসপ্লে, ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল সিস্টেমস, সেন্সরস প্রভৃতি। তার গবেষণামূলক কাজের পৃষ্ঠপোষক মার্কিন বিমান বাহিনী, মার্কিন নৌ গবেষণা কেন্দ্র, ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন, মার্কিন মহাশূন্য গবেষণা কেন্দ্র (নাসা), যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগ, ওহিও অ্যারোস্পেস ইনস্টিটিউট, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স ও রাইট প্যাটারসন এয়ার ফোর্স বেস। ছাত্রজীবনেই তিনি ৫৭ জন এমএস বা পিএইচডি শিক্ষার্থীর রিসার্চ মেন্টর বা গবেষণা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। লেখালেখিতেও যথেষ্ট সফল তিনি। অপটিকস অ্যান্ড ল্যাসার টেকনোলজি ম্যাগাজিনের নর্থ আমেরিকান সম্পাদক তিনি। এছাড়াও তিনি আইইই ট্রানজেকশনস অ্যান্ড এডুকেশনের সহযোগী সম্পাদক, মাইক্রোওয়েভ অ্যান্ড অপটিক্যাল টেকনোলজি লেটারস এবং ওয়ার্ল্ড জার্নাল অব মডেলিং অ্যান্ড সিমুলেশনের সম্পাদনা পরিষদের সাথে জড়িত। ২৪টি বিশেষ সাময়িকীর অতিথি সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি লিখেছেন ১৮টি পাঠ্য ও রেফারেন্স বই, সাড়ে তিনশ’রও বেশি গবেষণাপত্র, সাতটি বইয়ের অধ্যায়, দশটি গ্রন্থ পর্যালোচনা, অসংখ্য টেকনিক্যাল রিপোর্ট, সম্পাদকীয় প্রভৃতি। তার লেখা বই বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়। তিনি ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারস (আইইইই), দ্য অপটিক্যাল সোসাইটি অব আমেরিকা, দ্য সোসাইটি অব ফটো-ইনস্ট্রুমেন্টেশন ইঞ্জিনিয়ার্স (এসপিআইই), ইনস্টিটিউট অব ফিজিক্স ইন ইউনাইটেড কিংডম ও বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সের নির্বাচিত ফেলো এবং ইউনিভার্সিটি অব আলবামার সম্মানিত ইঞ্জিনিয়ারিং ফেলো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্রুততম ভাসমান ট্রেন চলাচল প্রযুক্তি বাস্তবায়নে ড. আতাউল করিমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
পুরস্কার ও সম্মাননা: বিজ্ঞানের জগতে বিশাল অবদানের জন্য অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন ড. করিম। এরমধ্যে ১৯৯৮ সালে আউটস্ট্যান্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড, ১৯৯৪ সালে আউটস্ট্যান্ডিং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড, ১৯৯১ সালে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ড ইন স্কলারশিপ, ১৯৯০ সালে নাসা টেক ব্রিফ অ্যাওয়ার্ড ও আপ অ্যান্ড কামার্স এডুকেশন অ্যাওয়ার্ড, ১৯৯৮ সালে এনসিআর স্টাকেহোল্ডার অ্যাওয়ার্ড প্রভৃতি। তিনি ‘আমেরিকান ম্যান অ্যান্ড ওম্যান ইন সায়েন্স’, ‘হু’জ হু ইন সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং’, ‘হু’জ হু ইন আমেরিকা’, ‘আউটস্ট্যান্ডিং পিপল ইন টুয়েন্টিন্থ সেঞ্চুরি’, ‘ডিকশনারি ইন ইন্টারন্যাশনাল বায়োগ্রাফি’ এবং ‘টু থাউজেন্ড আউটস্ট্যান্ডিং সায়েন্টিস্টস’র তালিকাভুক্ত। বাংলাদেশের বিজ্ঞান লেখক মোহাম্মদ কায়কোবাদের ‘মেধাবী মানুষের গল্প’ বইয়ে আতাউল করিমের কৃতিত্বের কথা উল্লেখ আছে।
পারিবারিক জীবন: আতাউল করিম ১৯৭৭ সালে একসময়ের সহপাঠী সেতারাকে বিয়ে করেন। সেতারা করিম পেশায় একজন বায়োকেমিস্ট। তারা ভার্জিনিয়া রাজ্যের ভার্জিনিয়া বিচে থাকেন। তারা এক ছেলে ও দুই মেয়ের জনক-জননী। ছেলের নাম লুৎফি এবং মেয়ের নাম লামিয়া ও আলিয়া।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কফি একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। নাস্তার টেবিলে পানীয় হিসেবে কফির জুড়ি নেই। কফিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে। যা আমাদের দেহের কোষগুলোকে ক্ষতিকর বিষাক্ত পদার্থ ও রাসায়নিকের মিশ্রণ ঠেকাতে সাহায্য করে। তবে আজ জেনে নেব কফির প্রথম আবিষ্কার কে? বিস্তারিত জানাচ্ছেন সাইফুর রহমান তুহিন-
ইতিহাস থেকে জানা যায়, আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ ইথিওপিয়ার কাফা অঞ্চলের খালিদ নামের এক আরবের এক মুসলিম পশু চরানোর সময় খেয়াল করে যে , জামের মতো এক ধরনের ফল খাওয়ার পর পশুগুলোকে অনেক সতেজ দেখাচ্ছে।সেই খালিদ ওই ফলগুলোকে সেদ্ধ করে সর্বপ্রথম কফি তৈরি করেন।
এরপরই কফি নামক এই পানীয় ইথিওপিয়া থেকে ইয়েমেনে রফতানি করা হয়। সেখানে সুফী-সাধকরা বিশেষ উপলক্ষে রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য এটি পান করেন।
পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষদিকে কফি পৌঁছে যায় মক্কা ও তুরস্কে। যেখান থেকে ১৬৪৫ সালে এটি যায় ইতালির ভেনিস নগরীতে। ১৬৫০ সালে পাস্ক রোসী নামের এক তুর্কীর হাত ধরে এটি ইংল্যান্ডে প্রবেশ করে। তিনি লন্ডন নগরীর লোম্বার্ড স্ট্রিটে সর্বপ্রথম কফির দোকান দেন।
এরপরই বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রসার লাভ করে পানীয়টি। ফলে ইথিওপিয়াকে কফির জন্মস্থান মনে করা হয়। ইথিওপিয়ায় জন্ম নেওয়া কফি গাছ থেকে পাওয়া কফিকে বলা হয় ‘অ্যারাবিকা’।
শ্রীলঙ্কার বিপর্যয়কর সন্ত্রাসী হামলার কর্মপদ্ধতিটি নিশ্চিত করে যে হামলাকারীরা ছিল সুসংগঠিত ও প্রশিক্ষিত গ্রুপ। কারো কারো মতে এটি হতে পারে এলটিটিইর কাজ, ইসলামিক স্টেট (আইএস) বা দায়েশ ইত্যাদি। তবে কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপ দায়িত্ব স্বীকার বা কাউকে সন্দেহ করার আগে ভারতীয় মিডিয়া দাবি করে বসে যে ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত (এনটিজে) নামের স্থানীয় ইসলামী গ্রুপ এর সাথে জড়িত। বোমা হামলার দুদিন পর শ্রীলঙ্কার তদন্তকারীরা এনটিজের নেতা জাহরান হাশিমকে এই হামলার পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবায়নকারী হিসেবে শনাক্ত করে।
অনেক ভাষ্যকার এই মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে নানা ভাষ্য দিচ্ছেন। এখন তদন্তকারীদের খতিয়ে দেখতে হবে, এ থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হচ্ছে কারা?
কলম্বোতে এক সংবাদ সম্মেলনে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থমন্ত্রী রাজিথা সেনারত্নে বলেন: একটি ছোট গ্রুপ এত বড় কাজ করতে পারে বলে মনে হচ্ছে না। আমরা এখন এই গ্রুপের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন ও তাদের সাথে অন্যদের যোগাযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কা ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত (এসএলটিজে) ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত তামিল নাড়ু তৌহিত জামায়াতের (টিএনটিজে) শাখাবিশেষ। ইসলাম প্রচারের উদ্দেশে গঠিত এই সংগঠনটি অরাজনৈতিক। তারা সামাজিক নানা কাজে জড়িত। বিশেষ করে এতিমখানা, মসজিদ ইত্যাদির সাথে তারা সম্পৃক্ত। বাবরি মসজিদ পুনঃনির্মাণের দাবিতে সংগঠনটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেছে তামিল নাড়ুজুড়ে। তারা দ্রুততার সাথে শ্রীলঙ্কার গ্রুপটির সাথে সম্পর্ক না থাকার কথা জানিয়ে বলেছে, ওই বোমা হামলার ঘটনার সাথে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
কেবল ভারতীয় সংবাদপত্র দি হিন্দুই নয়, বরং একইসাথে একটি শীর্ষস্থানীয় সামরিক সূত্রও অভিযোগ করে, শ্রীলঙ্কার বোমা হামলার মূল হোতা জাহরান হাশিম অনেকটা সময় দক্ষিণ ভারতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ এনজেটি ভারতের তামিল নাড়ুর একই স্থান থেকে প্রশিক্ষণ পেয়েছে, সেখানে একসময় লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলাম (এলটিটিই) প্রশিক্ষণ গ্রহণ করত। উল্লেখ্য এই গ্রুপটি সৃষ্টি ও সমর্থনের পেছনে যে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র জড়িত ছিল, এটা কোন কাকতালীয় ঘটনা নয়।
শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনীর হাত থেকে এলটিটিইকে রক্ষার জন্য ইন্ডিয়ান পিস কিপিং ফোর্স (আইপিকেএফ) শ্রীলঙ্কা দখল করেছিল। ১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধীর হত্যা এবং আইপিকেএফ ও এলটিটিইর মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হওয়ার পরও এলটিটিইকে গোপনে গোপনে সমর্থন দিয়ে যায় র।
ইস্টার সানডে হামলা প্রসঙ্গে আসা যাক, শ্রীলঙ্কার কর্মকর্তারা সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে ওই হামলার সাথে জড়িত সব আত্মঘাতী হামলাকারীর মগজ ধোলাই ও প্রশিক্ষণের কাজটি করা হয়েছে তামিল নাড়ুতে এবং র কেবল হাশিমের ভারত থেকে শ্রীলঙ্কা যাতায়াতের ব্যবস্থাই করেনি, সেইসাথে লজিস্টিক সমর্থনও দিয়েছে।
ভারতের মতো স্থানে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ সভা, বিক্ষোভ করা কোনো মুসলিমস সংগঠনের নেতা কিভাবে শ্রীলঙ্কায় নিয়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস পায় যদি কেউ তাকে কেউ তাকে সহায়তা না করে?
এনডিটিভির তথ্য মতে, শ্রীলঙ্কার গোয়েন্দা কর্মকর্তাদেরকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা আসন্ন হামলা সম্পর্কে মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে সতর্ক করে দিয়েছিল। ভারতই প্রথম এ ধরনের তথ্য জানিয়েছিল। তবে যখন শ্রীলঙ্কার কর্মকর্তারা তা জানতে পারে, তখন আর কিছুই করার ছিল না। র এর মাধ্যমে এই ধারণা সৃষ্টির চেষ্টা করে যে সে এতে জড়িত নয়। এখন প্রশ্ন হলো, ভারত যদি তা জেনেই থাকে, তবে কেন তারা হাশিমকে আটকালো না?
ভারত তার পরিমণ্ডলে থাকা সব দেশে অ-রাষ্ট্রীয় অ্যাক্টিভিস্টকে র ব্যবহার করে বলে রেকর্ড রয়েছে।
ছদ্মবেশী হামলা
শ্রীলঙ্কার হামলাটিও ছদ্মবেশী হামলা বলে সব হিসাবে দেখা যায়। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য র’য়ের কর্মকর্তাদের লেখা বইগুলো পড়লেই চলবে। ১৯৭১ সালের ৩০ জানুয়ারি গঙ্গা নামের বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনাও এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে। তাদের লক্ষ্য একটাই তা হলো মুসলিমদেরকে কলঙ্কিত করা।
ভারতীয় মিডিয়ার পাকিস্তানি নাগরিকদের গ্রেফতারের কথাও বলা যায়। ওই রাতে আরো অনেক বিদেশীর সাথে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু বলা হলো কেবল পাকিস্তানি নাগরিকদের কথা।
হাইব্রিড যুদ্ধের কাইনেটিক মোড ভার্সনে ভারত এখন খুবই দক্ষ। তারা তাদের নিজস্ব মতাদর্শ ও এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে সব ধরনের কর্মপন্থা অবলম্বন করে থাকে।
বিশ্ব কেন এ দিকে চোখ বন্ধ করে আছে? ভারতের মদতপুষ্ট এলটিটিই কি সন্ত্রাসী সংগঠন ছিল না? এটা কি রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নয়?
পরাশক্তিগুলো ঐতিহাসিকভাবেই অনিয়মিত যোদ্ধা ও অ-রাষ্ট্রীয় অ্যাক্টরদের মদত দিয়ে থাকে তাদের বৃহত্তর সামরিক অভিযানকে বাস্তবায়ন করার জন্য। ভারত এই অঞ্চলে তার আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য তার পরিমণ্ডলে থাকা সব রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়াদিতে নিয়মিত হস্তক্ষেপ করে।
চীন ফ্যাক্টর
বিশেষ করে চীনকে সংযত রাখার জন্য এ কাজটি করতে উৎসাহিত হয়ে থাকে। ভারত একসময় সোভিয়েতদের এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রকে আফগানিস্তানে কাইনেটিক যুদ্ধ করতে উৎসাহিত করেছিল এই কারণে যে রুশ ও মার্কিন জীবন ও অর্থ ব্যবহার করে এবং আফগানিস্তানকে ধ্বংস করে সে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কাইনেটিক/নন-কাইনেটিক যুদ্ধ করার জন্য এই আফগানিস্তান প্লাটফর্ম ব্যবহার করতে পারে।
মোদির এজেন্ডা
বোমা হামলার জন্য মুসলিমদেরকে দায়ী করাটা আসলে মুসলিমদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবে তুলে ধরার জন্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুসলিমবিরোধী নির্বাচনী প্রচারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এমনকি ভারতীয় মিডিয়া এমনও বলেছে, ক্রাইস্টচার্চের বদলা নিতে এই কাজ করা হয়েছে।
ভারতের ছদ্মবেশী অভিযানের আরেকটি উদাহরণ হলো ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর হামলা। এলটিটিই প্রধান প্রভাকরণ ও সন্ত্রাসী গ্রুপটির আরো কয়েকজন সদস্য কিলোনোচিতে শ্রীলঙ্কান সেনাবাহিনীর অবস্থান নিয়ে উদ্বেগে ছিল। ওই সময়কার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি শ্রীলঙ্কা সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন প্রভাকরণকে অন্য কোথাও চলে যাওয়ার সুযোগ দিতে। লাহোর হামলার সাথে জড়িতদের ব্যাপারে তদন্তে দেখা গেছে, তাদের লক্ষ্য কিন্তু ক্রিকেটারদের হত্যা করা ছিল না। তারা চেয়েছিল তাদের পণবন্দি করে যাতে প্রভাকরণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
একথাও বিস্তৃত হওয়া যাবে না যে চীনাপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসার স্থলে ভারতপন্থী মৈত্রীপালা সিরিসেনাকে বসানোর পেছনে র-এর হাত ছিল। কিন্তু সিরিসেনা ভারতের নীতি অনুসরণ না করে চীনাদের সাথে থাকায় ভারত বিস্মিত হয়েছিল। ইস্টার ছদ্মবেশী হামলায় আসলে বর্তমান সরকারকে হেয় করার উদ্দেশ্যে করা। উল্লেখ্য, সিরিসেনা এমন অভিযোগও করেছিলেন যে র তাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছে। ভারত চায় শ্রীলঙ্কাকে তার অনুগত রাখতে। আবার ইস্টার সানডেতে যখন খ্রিস্টান উপাসনাকরীদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া চলছিল, তখন পশ্চিম শ্রীলঙ্কা থেকে শত শত মুসলিম প্রতিশোধের আশঙ্কায় তাদের বাড়িঘর থেকে পালিয়ে যাচ্ছিল। গৃহযুদ্ধ ধরনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হলে প্রথমে উদ্বাস্তু সৃষ্টি করতে হয়। শ্রীলঙ্কান স্বর্গে আবারো খুন আর নৈরাজ্য ফিরিয়ে আনতেই এই ছদ্মবেশী হামলাটি চালানো হয়েছে।
লেখক: প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক
নিউজ ডেস্ক:বিশ্বের সর্বোচ্চ উঁচু ভবন দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকার আদলে আলোকসজ্জা প্রদর্শন করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ২৬ মার্চ (মঙ্গলবার) স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৪০ মিনিটে এই আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে আলোকসজ্জা প্রদর্শন ২৫ সেকেন্ড স্থায়ী ছিল। এ সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত বাংলাদেশিরা উল্লাসে মেতে ওঠেন।
বুর্জ খলিফার উচ্চতা দুই হাজার ৭১৬ ফুট। ১৬৯ তলাবিশিষ্ট ভবনটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট খলিফা বিন জায়েদ আল নাহইয়ানের নামে নামকরণ করা হয়েছে। বুর্জ খলিফায় বিভিন্ন দেশের জাতীয় দিবস ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে কেন্দ্র করে আলোকসজ্জার মাধ্যমে একাত্মতা পোষণ করা হয়। আবার কখনও বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নিজ উদ্যোগে এমন আয়োজন করে থাকে।
এই প্রথমবারের মতো ২৬ মার্চ লাল-সবুজের রঙ মাখলো বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন। এ সময় আলোকসজ্জা দেখতে আসা প্রবাসীরা উল্লাস প্রকাশ করেন। প্রবাসীরা আরব আমিরাত সরকারকে ধন্যবাদ জানান। দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাকতুমের প্রশংসা করে প্রবাসীরা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতি তিনি যে সম্মান দেখালেন তাতে আমরা মুগ্ধ ও কৃতজ্ঞ।
নিউজ ডেস্ক:
অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী২০১১ সালে পদ্মা সেতু তৈরির সময় বাগড়া দেয় বিশ্ব ব্যাংক। এর ২০ বছর আগে যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু তৈরির সময়েও ঝামেলা করেছিল এ প্রতিষ্ঠানটি।
জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, “আমরা যখন যমুনা সেতুর দরপত্র আহ্বান করতে যাবো সেই সময়ে বিশ্ব ব্যাংক আমাদের বলে, ‘এখন এটি কোরো না’ (হল্ট, ডোন্ট ফ্লোট দ্য টেন্ডার)।”
বুধবার (৬ মার্চ) রাতে জাপানি দূতাবাস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জামিলুর রেজা চৌধুরীকে জাপানের অন্যতম বেসামরিক ‘অর্ডার অব দ্য রাইজিং সান’ খেতাবে ভূষিত করতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জাপানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায়ে অবদান রাখায় তাকে এ সম্মান জানানো হয়।
অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী জানান, ১৯৮৫ সালে যমুনা সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর চার বছর পরে এর দরপত্র আহ্বান করার সময়ে এটি বন্ধ করে দেয় বিশ্ব ব্যাংক।
তিনি বলেন, ‘এর পরের চার বছর আমরা কোনও পদক্ষেপ নিতে পারিনি। পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আমাকে খবর দিয়ে জানান, তিনি জাপান যাচ্ছেন এবং আমাকে তিনি সঙ্গে করে নিয়ে যেতে চান।’
অধ্যাপক জামিল জানান, অর্থমন্ত্রী তাকে নিতে চেয়েছিলেন, কারণ যমুনা সেতুর অর্থ সংস্থানের জন্য তিনি জাপানের সঙ্গে দর কষাকষি করছিলেন।
তিনি বলেন, ‘সেই সময়ে আমাদের ৬০০ মিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন ছিল। এর মধ্যে ২০০ মিলিয়ন ডলার বিশ্ব ব্যাংক, ২০০ মিলিয়ন ডলার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং ২০০ মিলিয়ন জাপানের দেওয়ার কথা ছিল।’
তিনি জানান, ওই সফরে জাপানের পক্ষ থেকে যমুনা ব্রিজ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে চাওয়া হয় এবং তার যাওয়ার কারণে তাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিতে অনেক সুবিধা হয়।
যমুনা ব্রিজ তৈরির সময়ে যে ‘প্যানেল অব এক্সপার্ট’ গঠন করা হয় সেই প্যানেলের প্রধান হিসেবে ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৮ অর্থাৎ ব্রিজের কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অধ্যাপক জামিল দায়িত্ব পালন করেন।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক জামিল সম্পর্কে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘জামিলকে আমি তার জন্মের সময় থেকে চিনি, কারণ তার জন্ম হয়েছে সিলেটে। সে আমার থেকে দশ বছরের ছোট এবং আমি তার বাবাকে চিনতাম যিনি ১৯২৯ সালে প্রকৌশল পাস করেন।’ প্রকৌশল বিষয়ে জামিল তার শিক্ষক এবং পথপ্রদর্শক (গাইড) বলেও মন্তব্য করেন মুহিত।
জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি বলেন, ‘১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু যখন জাপান সফর করেন তখন যমুনা ব্রিজের বিষয়টি অবতারণা করে সহায়তা চান।’
তিনি জানান, ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত জাপানের একটি সংস্থা এর ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ করে বলে, এটি বানানো কোনোভাবেই লাভজনক হবে না। কিন্তু জামিলুর রেজা চৌধুরী এটি ভুল প্রমাণিত করে ব্রিজটি তৈরি করার ক্ষেত্রে বিরাট বড় অবদান রেখেছেন।
প্রসঙ্গত, ১৮৭৫ সালে জাপানের সম্রাট মেইজি ‘অর্ডার অব দ্য রাইজিং সান’ সম্মান চালু করেন। এখন পর্যন্ত জামিলুর রেজা চৌধুরীসহ মোট নয়জন বাংলাদেশি এই সম্মানে ভূষিত হলেন।
বিশ্ববার্তা২৪ ডেস্ক:
শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো স্থগিতের পেছনে সমস্যার কথা স্বীকার করে এর জন্য ভারতীয় একটি কোম্পানিকে দায়ী করেছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান। শুক্রবার কিশোরগঞ্জে ক্যাপসুলের নমুনা দেখে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ভারতীয় একটি কোম্পানির সরবরাহ করা লাল রঙের ক্যাপসুলে সমস্যা।
“এসব ক্যাপসুল কৌটার সঙ্গে লেগে থাকে, আলাদা করা যাচ্ছে না। এখন ক্যাপসুলের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। ক্যাপসুলের মান পরীক্ষা করে প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ভারতীয় ওই কোম্পানি আদালতে মামলা করে তাদের কাজটি দিতে ‘সরকারকে বাধ্য করেছিল’ বলেও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী মুরাদ।
শনিবার সারা দেশে ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী দুই কোটির বেশি শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কথা ছিল। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওই কর্মসূচি স্থগিতের কথা জানায় জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান।
বিজ্ঞপ্তিতে কর্মসূচি স্থগিতের কোনো কারণ জানানো না হলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, “ক্যাপসুলের টেকশ্চারে সমস্যা থাকায় শনিবারের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। কয়েক জায়গায় খুলে দেখা গেছে, ক্যাপসুলগুলো একটির সঙ্গে আরেকটি লেগে আছে।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান দুপুরে কিশোরগঞ্জ সার্কিট হাউজে জেলা সিভিল সার্জনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ভিটামিন এ ক্যাপসুলের নমুনা দেখেন।
তিনি জানান, লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুলগুলো ভারতের মুম্বাইয়ের একটি কোম্পানির সরবরাহ করা। আর নীল রঙের ক্যাপসুলগুলো বাংলাদেশের একটি কোম্পানি সরবরাহ করে।
“নীল রঙের ক্যাপসুলগুলোর মান ভালো রয়েছে। সমস্যা শুধু লাল রঙের ক্যাপগুলোয়।”
ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল ক্যাম্পেইনে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের ১টি করে নীল রঙের এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের ১টি করে লাল রঙের ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমরা ভারতীয় কোম্পানিকে কাজটি দিতে চাইনি। তারা মামলা করায় সরকার তাদের কাজটি দিতে বাধ্য হয়েছিল।”
তিনি জানান, এ ক্যাপসুল কেনার কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৬ সালে। প্রথমে একটি দেশি ওষুধ কোম্পানি সরবরাহের কার্যাদেশ পেয়েছিল। কিন্তু ওই কার্যাদেশের বিরুদ্ধে আদালতে যায় ‘অ্যাজটেক’ নামে ভারতীয় কোম্পানিটি। আদালত ওই ভারতীয় কোম্পানিকে ক্যাপসুল সরবরাহের কাজ দেওয়ার নির্দেশ দেয়।এরপর তারা লাল রঙের এই ক্যাপসুল সরবরাহ করে।